(ভাবলাম আজ একটানা অনেক সময় পড়াশোনা করব । কিন্তু দূর্ভাগ্য আধা ঘন্টা হতে না হতেই সেই ইচ্ছে গুলো কোথায় যেন হারিয়ে গেল!
ভাবলাম আজ বন্ধুদের সাথে টাইম কাটাব না বরং বইয়ের সাথে কিছুটা টাইম কাটাব।
কিন্তু আমার মন তা হতে দিল না । )
ভাবলাম আজ বন্ধুদের সাথে টাইম কাটাব না বরং বইয়ের সাথে কিছুটা টাইম কাটাব।
কিন্তু আমার মন তা হতে দিল না । )
তাই একটু লিখতে শুরু করলাম। এটা আমার প্রথম লেখা তাই কিছু ভুল ত্রুটি থেকে যেতে পারে । ভুল ধরিয়ে দিলে ভবিষ্যতে আরো লেখার জন্য অনুপ্রেরণা পাব। আশা করি সকলের কাছে ভালো লাগবে এবং শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে । সকলের ভালো লাগার মাঝেই আমার সার্থকতা ।শুরুতেই ব্রাকেটে যে অভিজ্ঞতাটুকু বললাম তার সাথে সবাই কম বেশী পরিচিত । তাছাড়া অনেকের মনে
অনেক সময় এই ভাবনাটাও আসে ,যে এভাবে চললে রেজাল্ট খারাপ হবে । আর রেজাল্ট খারাপ হলে , সুন্দর একটা ক্যারিয়ার গড়তে বাধা হয়ে দাঁড়াবে ।
ভবিষ্যতে আমাকে অনেক খারাপ দিন দেখতে হবে ।
কিন্তু এত কিছু জানার পরও কীভাবে যে আমি ভুল পথে যাই বুঝতেই পারি না ।
প্রিয় ভাই বোনেরা এবার আসি কাজের কথায় ।
আমি উপরে যা বললাম তা খুবই সাধারণ মনে হলেও এই কথাগুলোর ব্যপকতা আছে । শুধু আমার ক্ষেত্রেই নয় বরং অনেকের মধ্যেই এরকম নানা রকম চিন্তা-ভাবনা বা সমস্যা আছে ।
যদি কারো ক্ষেত্রে এগুলো সত্যি না হয় তাহলে সে অন্যদের থেকে আলাদা ।
ভাই তুমি বুঝবে অবশ্যই বুঝতে পারবে যেদিন দু টাকার জন্য মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হবে।
যেদিন টানা রোদ্দুরে মাঠে ধান কাটতে হবে কিংবা ইট বালি সিমেন্ট মাথায় বইতে হবে । এরকম কিছু করতে না হলেও এমন কিছু করতে বাধ্য হবে যেখানে তারা যা বলবে সেটাই শুনতে হবে এবং করতে হবে ।
সেদিন তোমাকে আফসোস করতেই হবে যে আজকের এই দিন টাকে তুমি কেন নষ্ট করেছিলে । তখন তোমার কাছে এই ফেসবুক,মেসেন্জার, হোয়াটসএপ ,ইন্সাগ্রাম ,ইত্যাদি যাই বলোনা কেন বিরক্তিকর লাগবে । যদি তুমি বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স না পাও অথচ তোমার বন্ধু চান্স পেয়ে গেছে তাহলে কিছুদিনের মধ্যেই দেখবা তোমার সেই প্রিয় বন্ধুটিও কীভাবে পাল্টে গেছে তোমাকে সময় দেওয়ার মতো তার আর সময় থাকবে না ।
তুমিই বলো যখন তোমার প্রিয় মানুষটা তোমাকে মেসেজে রিপ্লাই দেয় না তখন তোমার কেমন লাগে?
যখন তোমার পোস্টে লাভ রিয়াক্ট দেওয়া তো দূরের কথা তোমার টাইমলাইনেই কখনো যায়না তোমার কেমন লাগে?
ভাই এতক্ষণ যেগুলো বললাম এগুলো হয়তো সহ্য করতে পারবা কিন্তু বিশ্বাস করো নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে না পারলে তুমি সকলের চোখের বালি হয়ে যাবা । ফেসবুকে যেতেও খুব খারাপ লাগবে , এতটাই খারাপ লাগবে যখন নিউজফিডে তোমার প্রিয় বন্ধুটিকে দেখবা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়ে কতইনা আনন্দে আছে , সবাই তার টাইমলাইনে অভিনন্দন জানাচ্ছে তখন এসব দেখে তোমার আত্মহত্যা করতে ইচ্ছে হবে । কিন্তু কি আর করার জীবন তো একটাই, আত্মহত্যা করলে পরপারে গিয়েও শান্তি পাবা না ।
তোমার এই আজকের দিনে করা ছোট ছোট ভুল গুলো কবে যে একটি বড় রূপ নিয়ে নিবে সেটা তুমি বুঝতেও পারবে না । আজকের এই ফালতু জিনিস গুলোর ভিতরে কতটা কষ্ট লুকিয়ে আছে সেটা তুমি ভবিষ্যতে বুঝতে পারবে । আজ তুমি যে জিনিসগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছ সেগুলো যে তোমার ভবিষ্যতের জন্য অর্থহীন আগামী সময় সেটা প্রমাণ দেবে ।
আজ তোমার কাছে তোমার বাবার দেওয়া রঙিন চশমাটা খাটানো আছে বলে তুমি দেখতে পাচ্ছ না । তোমার কাছে সবকিছুই রঙিন লাগছে । আর যখন চশমা খুলে ঐ ব্লাক & হোয়াইট বইগুলো পড়তে বস , পড়ার আগেই তোমার কাছে সেগুলো অস্বস্তিকর লেগে যায় ।
তবে আজ তোমার ঘরের দেয়ালে বড় বড় করে লিখে রাখো
" আমি লুজার"
কারণ এভাবে চলতে থাকলে তুমি সেটাই হতে চলেছ ।
আমার এই কথা গুলো শুনে তোমার হয়তো খারাপ লাগছে, আমার প্রতি রাগ হচ্ছে , তাহলে বলব তোমার মধ্যে যদি এতটুকু দম থাকে তাহলে যাও "আমি লুজার " এটাকে মুছে দিয়ে ঐ জায়গাতেই বড় বড় কে লিখ "আমি winner " আর আজ এখন থেকেই সেটা হওয়ার জন্য মনে মনে জেদ বানিয়ে নাও আর তার জন্য কাজ শুরু করে দাও । যদি পড়তে বসে ঘুম পেয়ে যায় তাহলে ছাদে গিয়ে টানা রোদ্দুরে বসে পড় । আরামের জায়গা ছেড়ে কষ্টের জায়গায় পড়তে বসা শুরু করো , কারণ তোমার মাইন্ড তখন এটা বুঝে যাবে যে এর সাথে লড়াই করে আর পারা যাবে না , কারণ এর জেদ আমার থেকেও স্ট্রং হয়ে উঠেছে । যদি পড়তে পড়তে বন্ধু বান্ধব আর যত্তসব ফালতু চিন্তা মাইন্ডে আসে তাহলে চলতে দাও । কিন্তু মনে মনে এটা জেদ বানিয়ে নাও যে যতসময় না আমি এই চ্যাপ্টারটা শেষ করতে পারবো যতসময় আমি এখান থেকে উঠব না ,তাতে যদি সারারাত লেগে যায় তবু স্বীকার । এটা করতে গিয়ে একদিন, দুদিন, তিনদিন তোমার একটু কষ্ট হবে কিন্তু বিশ্বাস করো চারদিনের দিন থেকে সারাজীবনের জন্য ঐ বিষয়ে তোমার মাইন্ড আর পাঙ্গা নিবে না ।
কারণ সে এটা বুঝে যাবে পড়ার সময় মন দিয়ে পড়াটা সব থেকে বেশি জরুরী । আজ তুমি তোমার জীবনের সবকিছুর সাথে স্যাক্রিফাইস করো,কিন্তু পড়াশোনার সাথে কর না । কারণ এটা তুমি এতটুকু করা শুরু করবে তো তোমার মন সেটা আরো বেশী বেশী করতে চাইবে ।
যদি কখনো মনে এই চিন্তাটা আসে , যে এত খেটে কেনো আমি এত ভালো স্টুডেন্ট হবো? তাহলে তোমার মনকে এটা জিজ্ঞাসা করো কেন আমি একটা ভালো স্টুডেন্ট হবো না । আর একটু ভাবো , বেশী কষ্ট না করে
আরাম করলে জীবনে কী কী পাব?
আজ প্রেসার না নিয়ে তুমি তোমার স্টুডেন্ট লাইফ আরামে কাটালে সামনের জীবনে বেশী আরাম করতে পারবে না । কিন্তু বেশীরভাগ স্টুডেন্টই এই বিষয়গুলোকে তেমন গুরুত্ব দেয় না । আর এজন্যই সবাই অসাধারণ কিছু করতে পারে না । কিন্তু বিশ্বাস কর তুমি সেই বেশীরভাগ স্টুডেন্টের মত সাধারণ নও । তুমি তোমার চিন্তাভাবনা তাদের মত তৈরি কর না ।
সাধারণ ভাবনা চিন্তা করবে? সাধারণ কাজ করবে? সাধারণ স্বপ্ন দেখবে? তো সারাজীবন সাধারণই থেকে যাবে । জীবনে বড়ো কোনো কিছু অর্জন করতে পারবে না । জীবনে কিছু অর্জন করতে গিয়ে হেরে যাওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয় ।
নিজের স্বপ্নের পিছনে ছুটতে ছুটতে যদি নিচে পড়ে যাই তাহলে সেটা কোনো বড় ব্যাপার না ।
আমি হেরে গিয়েছি,পড়ে গিয়েছি ,কিন্ত আমাকে কেউ তুলতে আসে নি,আমাকে বাঁচাতে আসে নি । এগুলো ভেবে আফসোস করাটাও বড় কোনো ব্যাপার না ।
পৃথিবীতে অনেক মানুষ আছে , আমি হেরে গিয়েছি তার কারণ ওরা,আমি যেটা করতে চেয়েছি সেটা ওরা করতে দেয় নি ,এজন্যই আমি সফল হতে পারি নি । এরকম অজুহাত দেওয়ার মতো মানুষ এই পৃথিবীতে অনেক আছে । আমি হেরে গিয়েছি বলে আর জিততেই পারব না এরকম কোনো অর্থ নেই । কখনও এরকম ভেবোনা,যে আমি এটা করতে পারব না । বরং এটা ভাব যে আমি এটা করতে পারবই,এই কাজটা করার জন্যই আমি পৃথিবীতে এসেছি । সেটাই তোমার আগামী জীবনের ভীত হয়ে দাঁড়াবে ।
আজ থেকে একটু পরিশ্রম করেই পড়াশোনা করো , কোনো ব্যাপার না সেটা যতই কঠিন হোক না কেন ,কোনো ব্যাপার না সেটা করতে যত টাইম লাগুকনা কেন, কোনো ব্যাপার না সেটা করতে গিয়ে সারারাত কেটে যাক না কেন, শুধু এটা জেনে রেখো,মনে রেখো সফলতা পাওয়ার অনুভূতি পৃথিবীর সবথেকে মূল্যবান ও মহান অনুভূতি ।
আই উইশ ইউ অল দ্যা বেস্ট ।
Written By:
© Al Amin Islam
Department of Management Studies
Begum Rokeya University, Rangpur
Comments
Post a Comment
Thanks for your comment. We appreciate it